
রিয়াদ: আজান বন্ধ ও মসজিদ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় সৌদি আরবের সাংবাদিক মোহাম্মাদ আস-সাহিমিকে সাময়িক নিষিদ্ধ করেছে সরকার। সাহিমি সৌদি সরকার পরিচালিত আল-ওয়াতান পত্রিকার সাংবাদিক।
কার্বোনেটেড.টিভি নামের একটি গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, সৌদি সরকার সাহিমিকে গণমাধ্যমে লেখা ও গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কার্যক্রম থেকে সাময়িক নিষিদ্ধ করেছে।
অন্যদিকে, মিডলইস্টআই ডটনেট নামের একটি গণমাধ্যম বলেছে, সোমবার সৌদি আরবের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ওই সাংবাদিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক এমবিসি টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাহিমি বলেন, মাইকে আজান দেওয়ার কারণে আতঙ্কগ্রস্ত থাকে শিশুরা। এ ছাড়া এক সঙ্গে আজান দেওয়ায় সবার অসুবিধা হয়।
তিনি বলেন, সৌদি আরবে মসজিদের সংখ্যা অনেক বেশি। আর বেশি সংখ্যক মসজিদ থাকার কারণে ভালোর চেয়ে মন্দও বেশি হচ্ছে।
এর আগেও একবার মাইকে আজান বন্ধের দাবি উঠেছিল, সেই দাবি বাস্তবায়ন না করায় ধর্মীয় নেতাদের সমালোচনাও করেন সরকাপন্থী এই সাংবাদিক।
উল্লেখ্য, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান সম্প্রতি দেশটিতে অনেক সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন। তারই অংশ হিসেবে নারীদের গাড়ি চালানো, স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখা, ব্যবসা করতে পুরুষের অনুমতি না নেওয়া, কনসার্টে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি দেশটির এক শীর্ষ ধর্মীয় নেতা বলেছেন, সৌদি নারীদের লম্বা পোশাক তথা আবায়া পড়ার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।
আধুনিকতার নামে ইসলামের প্রাণকেন্দ্র সৌদি আরবে যখন এসব সংস্কার কর্মযজ্ঞ চলছে তখন ওই সাংবাদিক সুযোগ বুঝে এ ধরনের দাবি জানালেন বলে মনে করা হচ্ছে।
সৌদি আরবে মসজিদের সংখ্যা কমানো ও মাইকে আজান প্রচার বন্ধের আহ্বান
রিয়াদ: সৌদি আরবে মাইকে আজান প্রচার বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির এক সাংবাদিক। সেইসঙ্গে দেশটিতে মসজিদের সংখ্যা কমানোরও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আর তাই সেই দাবি প্রচার করেছে দেশটির একটি টেলিভিশন চ্যানেল।
ব্রিটেনভিত্তিক আল-আরাবিয়া এক প্রতিবেদনে বলেছে, প্রখ্যাত সৌদি সাংবাদিক মোহাম্মাদ আস-সাহিমি দেশটির এনবিসি টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সৌদি আরবের সব মসজিদের মাইকে আজান প্রচার বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন।
আস-সাহিমি সৌদি সরকার পরিচালিত টেলিভিশন চ্যানেল এনবিসিতে সম্প্রচারিত সাক্ষাৎকারে নিজের দাবির ব্যাখ্যা জানাতে গিয়ে বলেছেন, একই সময়ে বহু মসজিদের মাইকে আজান প্রচারিত হলে জনগণের অসুবিধা হয় এবং শিশুরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
সৌদি সাংবাদিকের এই আহ্বান সম্পর্কে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা বলেছে, ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে আজান, যা মানুষকে নামাজ পড়ার আহ্বান জানায়।
চ্যানেলটি আরো বলেছে, সৌদি আরবের টেলিভিশন থেকে এ ধরনের সাক্ষাৎকার সম্প্রচারের উদ্দেশ্য সুবিধাজনক নয়। সৌদি সরকার মসজিদের মাইকে আজান প্রচারের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করার ক্ষেত্র প্রস্তুত করার জন্য এ কাজ করে থাকতে পারে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, মুসলমানদের দুটি পবিত্র স্থান সৌদি আরবে অবস্থিত বলে দেশটির সরকার নিজেকে আধ্যাত্মিক নেতা বলে মনে করে যা চরম বিস্ময়কর।
আল-আরাবিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী মসজিদে মাইকে আজান প্রচার বন্ধের দাবি জানায়। এমবিসি টেলিভিশনে এ ব্যাপারে আস-সাহিমির মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি এর পক্ষে বলে জানান।
সৌদি আরবে মসজিদের সংখ্যা অনেক বেশি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সেইসঙ্গে এর আগে মসজিদে মাইকে আজান বন্ধের যে দাবি উঠেছিল তাও বাস্তবায়ন না করায় ধর্মীয় নেতাদের সমালোচনাও করেন তিনি।
পাঠকের মতামত